ঘর-বাড়ি থেকে এখনো পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগে বেড়েছে বানভাসি মানুষের

- আপডেট সময় : ০৩:০৬:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০২০
- / ১৫৪৫ বার পড়া হয়েছে
কুড়িগ্রাম, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও কোথাও কোথাও আবার বাড়তে শুরু করেছে।ঘর-বাড়ি থেকে এখনো পানি নেমে না যাওয়ায় দুর্ভোগে বেড়েছে বানভাসি মানুষ। পাশাপাশি এ সব এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি বাহিত নানা রোগ।
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমলেও আবারো বেড়েছে ধরলার পানি। এ দুটি নদ-নদীর পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুর্ভোগ কমেনি বন্যা দুর্গত মানুষজনের। চরাঞ্চলের কিছু ঘর-বাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করলেও বেশির ভাগ ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে যায়নি। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ঘর-বাড়ির বাসিন্দারা এখনও ঘরে ফিরতে পারেনি।
জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুরে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে আজ সকালে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমা অব্যহত থাকলেও এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্টে আরও ৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার কমে শুক্রবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পদ্মা ও আড়িয়াল খা নদে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র সোতে অব্যাহত থাকায় মাদারীপুরের শিবচরের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গন প্রকট আকার ধারন করেছে। পদ্মার ভাঙ্গনে চরাঞ্চল কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের একটি ৩ তলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টার ভবন ও ৬ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৬০ হাজার পরিবার।
ঢাকার আশপাশের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে সাভার ও ধামরাইয়ের নতুন নতুন এলাকা। বন্যার পানিতে সবজি ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে এ দুই উপজেলায় অন্তত ৩’শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি চাষীদের।
গোপালগঞ্জে মধুমতি নদী ও কুমার নদের পানি বৃদ্ধিতে গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলার ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। মধুমতি নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৯ সেন্টিমিটার এবং মাদারীপুর বিল রুট ক্যানেল পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বাড়ী ঘরে পানি ঢুকে পড়ছে।
ফরিদপুরের পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরুকরেছে।গত২৪ঘন্টায়পদ্মানদীরপানি১১সেন্টিমিটারকমেতাবিপদসীমার৯১সেন্টিমিটারউপরদিয়েপ্রবাহিতহচ্ছে।পানিকমলেওবন্যাকবলিতমানষেরদূর্ভোগকমেনি।
সকাল ৯টার দিকে যমুনার পানি শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ নদ নদীর পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি জেলার ২ লাখ পানি বন্দি মানুষের।
নেত্রকোনায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও মানুষের দুর্ভোগ কমছেনা। ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে খালিয়াজুরীর উপজেলার হাজারো মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া কংস, ধনু, সোমেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত।
গাজীপুরে তুরাগ ও বংশী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কালিয়াকৈর উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের ১১২ টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে । সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সুত্রাপুর, শ্রীফলতলী ও ঢালজোড়া ইউনিয়নের গ্রাম গুলো । এসব স্থানে পানিতে তলিয়ে গেছে পাক ও কাঁচা রাস্তা । এখানকার মানুষগুলো এখন পানিবন্দি । ৮ টি আশ্রায়ন কেন্দ্র ১২৪ টি পরিবার বন্যার কারণে আশ্রয় নিয়েছেন । নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে । স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় ৪০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে