সিআরবি’র বৃক্ষনিধন নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে চট্টগ্রামবাসী

- আপডেট সময় : ০২:৪৮:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১
- / ১৫২৫ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রামে ফুসফুস হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন সিআরবি সিরিষতলায় হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের প্রস্তাবে ক্ষোভে ফুঁসছে বন্দর নগরীর বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে আন্দোলনে নামার পাশাপাশি প্রকল্প বন্ধে আইনি প্রক্রিয়াও শুরু করেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। তাদের দাবি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিরুপ প্রভাব পড়বে পরিবেশের ওপর। আর রেলওয়ে বলছে শতবর্ষি গাছ সংরক্ষণ করার শর্তেই হাসপাতাল নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন তারা।
চট্টগ্রামের সিআরবি সিরিষতলা। রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ের সামনের এই অংশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। ছোট-বড় কয়েকটি পাহাড়ের ঢালে অসংখ্য শতবর্ষি গাছ তার ছায়ায় ঢেকে রেখেছে পুরো এলাকাটি। সবুজের সমারোহে দাড়িয়ে প্রাণভরে নি:শ্বাস নিতে এখনো অনেকেই ছুটে আসেন সিরিষতলায়। পহেলা বৈশাখ, বসন্ত বরণেরমতো বাঙালীর সার্বজনীন উৎসবগুলোও পালিত হয় সিআরবিকে ঘিরেই। তাই এটাকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেও ঘোষণা করেছে সিডিএ।
বন্দরনগরীর এই ফুসফুসে এবার করাত চালানোর বন্দোবস্ত করেছে রেলওয়ে। সিরিষতলার ৬ একর জমিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে ৫০০ শয্যার একটি হাসপাতাল ও ১০০ সিটের একটি মেডিকেল কলেজ নির্মানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। আর এতেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্টের আশংকা নগরবিদদের।
ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রেলওয়ের চুক্তি গত বছর হলেও সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ এখানে সাইনবোর্ড তুললে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নগরবাসী। প্রতিদিন বিক্ষোভ-মানববন্ধনের পাশাপাশি প্রকল্প বাতিলে আইনী নোটিশও পাঠিয়েছে একটি মানবাধিকার সংগঠন।
জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির নেতারা বলছেন, রেলওয়ের কর্মচারী ও দরিদ্র রোগীকে বিনা পয়সায় সেবা দেয়ার শর্তে রেলের জমিতে বেসরকারী হাসপাতাল গড়ে তোলার একাধিক নজির আছে চট্টগ্রামে। কিন্তু এসব হাসপাতাল থেকে দরিদ্র রোগীরা উপকৃত হওয়ার নজির তৈরী হয়নি এখনো। তাই সবুজ ধ্বংস করে এমন প্রকল্পের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তোলেন এই চিকিৎসক।
আর রেলওয়ে বলছে শতবর্ষি গাছগুলো সংরক্ষণ করেই হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার কাজ করছেন তারা। জিভি-রেল
বন বিভাগের তালিকায় এলাকাটি টাইগারপাস জোন হিসেবে পরিচিত। যেখানে ৫০ প্রজাতির পাখিসহ ১৩৮ প্রজাতির বন্যপ্রাণী অস্তিত্ব আছে। হাসপাতালের নামে অবকাঠামো ও জনসমাগম বাড়লে এসব প্রাণী ও উদ্বিত অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলেও আশংকা সংশ্লিষ্টদের।