রোহিঙ্গাদের একাংশকে ভাসানচরে স্থানান্তর করে মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করেছে সরকার
- আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২০
- / ১৫৪৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের একাংশকে ভাসানচরে স্থানান্তর করে মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করেছে সরকার। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সক্রিয় হওয়া জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ১১ লাখের মধ্যে মাত্র একলাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করে নিরাপদ হওয়ার সুযোগ নেই। সবচে’ ভালো হতো রোহিঙ্গা বোঝাই জাহাজ ভাসানচরের পরিবর্তে মিয়ানমারে পাঠাতে পারলে।
২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেদেশের রোহিঙ্গা নাগরিকদের ওপর নৃশংস গণহত্যা শুরু করলে মানবিক দিক বিবেচনায় সীমান্ত খুলে দেয় বাংলাদেশ সরকার। সেই থেকে একে একে ১০ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক আশ্রয় নেয় কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায়। তাদের বসবাসে কুতুপালংয়ে নির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু ক’দিনের মাঝেই সেই গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না থেকে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা শুরু হয় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে। জড়িয়ে পড়তে শুরু করে নানান অপরাধ কর্মকাণ্ডেও।
এই বাস্তবতায় রোহিঙ্গাদের একাংশকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ- নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একলাখ রোহিঙ্গার বসতি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ রেখে পরিকল্পিত স্থাপনাও গড়ে তোলা হয় সেখানে। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আপত্তির কারণে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন বাধাগ্রস্ত হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ১৬ শো ৪২ জন রোহিঙ্গাকে পাঠানো হয়েছে ভাষাণচরে।
তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এতদিন রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলগুলোর নজর শুধু কুতুপালংয়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়লো ভাসানচরেও।
মিয়ানমারে কর্মরত সাবেক সেনা কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলামের মতে, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে পুনর্বাসন হিসেবে প্রচার করে আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করতে পারে ধুরন্ধর মিয়ানমার। আর গবেষক আবু নোমানের মতে, ঘনবসতি এলাকা থেকে সরিয়ে একলাখ মানুষকে উন্নত জীবনের সন্ধান দিয়ে মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডকেই নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে প্রত্যাবাসনের কোন দ্বন্দ্ব নেই।
এই দুই বিশেষজ্ঞের মতে ভাসানচরে স্থানান্তরের পর সবার নজর এখন সেদিকে। তবে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে তাদেরকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোন বিকল্প নেই। তাই সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে চীন-ভারতসহ আন্তর্জাতিক পক্ষকে সক্রিয় করতে কুটনৈতিক তৎপরতা আরো বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।


















