না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুল কাদের
- আপডেট সময় : ০১:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০
- / ১৫৪৭ বার পড়া হয়েছে
ক্যান্সার আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুল কাদের। সকালে রাজধানীর বেসরকারী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। হাসপাতাল থেকে গোসলের জন্য অভিনেতার মরদেহ মোহাম্মদপুর আল মারকাজুলে নেয়া হচ্ছে। এরপর আবদুল কাদেরকে নেয়া হবে মিরপুরের নিজ বাসায়। বাদ জোহর মিরপুর ডিওএইচে সেন্ট্রাল মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নেয়া হবে তাকে। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা। এরপর বনানী কবরস্থানে ৩য় জানাজা শেষে সন্ধ্যায় দাফন করা হবে জনপ্রিয় এই অভিনেতাকে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি মহাসচিবসহ অনেকেই।
একজন অভিনেতা। যার বলিষ্ঠ অভিনয় শৈলীতে মানুষ তার ভক্ত। অনেক চরিত্রের মধ্য সবচে জনপ্রিয় হুমায়ন আহমেদের বদি ভাই চরিত্রটি। একটি চরিত্র কি করে একজন মানুষকে অমর করে তোলে এখন টের পাবেন আব্দুল কাদেরের অনুরাগীরা।
এই মানুষটির জন্ম মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার সোনারং গ্রামে ১৯৫১ সালে। বাবা আবদুল জলিল, মায়ের নাম আনোয়ারা খাতুন। শুরুটা কিন্তু অভিনয় দিয়ে নয়। সবচে খটমটে বিষয়ে অর্থনীতিতে সবোর্চ্চ ডিগ্রী নিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ডিগ্রি নেয়ার পর সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে অধ্যাপনা করেন। পরে বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগ দেন। বিটপী ছেড়ে পরে তিনি বহুজাতিক কোম্পানি বাটা’য় যোগ দেন ১৯৭৯ সালে। সেদিন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ বছর কর্মময় জীবন কেটেছে সেখানেই। সজ্জন এই ব্যক্তির বন্ধুসংখ্যাও অনেক।
এর মাঝে, ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সাল থেকে থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য এবং চার বছর যুগ্ম সম্পাদকের ও ছয় বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি থিয়েটারের প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আব্দুল কাদের মঞ্চ ও ছোট পর্দার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও । অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেতা। ২০০৪ সালে আবদুল কাদের অভিনয় করেন ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে। কাদের অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’।
অংসখ্য নাটকের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মাটির কোলে’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘সবুজ সাথী’। এমন অনেক অনেক নাটকের সংলাপ আর চিত্র কাঁদাবে তার ভক্তকুলকে।
দীর্ঘ অভিনয় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে টেনাশিনাস পদক, মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক, অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, যাদুকর পি.সি. সরকার পদক, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, মহানগরী অ্যাওয়ার্ডসহ বেশকিছু পদকও পেয়েছেন আবদুল কাদের।
রংয়ে, হাসিতে, খলনায়কে সব চরিত্রকে নিজগুণে রাঙিয়েছেন যে অভিনতা। পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চলে গেলেন তিনি। জীবন ও অভিনয় কোন পান্ডুলিপিতেই আর নিজেকে ঢেলে দেবেন না কখনোই।






















